প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়টি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার পৌরসভার ওয়ার্ড নং- ০৮, উত্তর কালিন্দিপুর (রাজবাড়ী এলাকায়) অবস্থিত। কথিত আছে অত্র প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ছিলেন রাজমাতা বিনীতা রায় (তৎকালীন রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা), যিনি ১৯৪৯ সালে ভারতের প্রখ্যাত নৃত্য শিল্পী ও অভিনেত্রী সাধনা বোস (রাজমাতা বিনীতা রায়ের ছোট বোন) এর চ্যারিটি শো থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে পুরাতন রাজবাড়ী (রিজার্ভ মুখ) এলাকায় প্রষ্ঠিানটির কার্যক্রম শুরু করেন। কাপ্তাই হ্রদে বাঁধ দেওয়ার পর এলাকার বাস্তবতায় ১৯৬৯ সালে কাঠালতলী জুনিয়র হাই স্কুল হিসাবে বিদ্যালয়টি ০১/০১/১৯৬৯ সাল থেকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা সদরস্থ কাঠালতলী নামক স্থানে (যা বর্তমানে চারুকলা একাডেমী) কাঠালতলী জুনিয়র স্কুল নামে তার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। তারপর যথাযথ বিধি অনুসরণ পূর্বক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, কুমিল্লা এর (Memo No.- SR-18/Ctg-HT/72/607, Dated-14-03-1974) মূলে ০১/০৩/১৯৭৩  থেকে মানবিক বিভাগের অনুমতিসহ কাঠালতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে সর্বপ্রথম ৪ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি সনদ প্রাপ্ত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বৃদ্ধিসহ বিদ্যালয়ের জায়গার অপর্যাপ্ততার কারণে তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের অনুরোধক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা মৌজা প্রধান ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় মহোদয় কর্তৃক ১০২নং রাঙাপানি মৌজার ৭২নং খতিয়ানের ৪৯২ নং দাগের ৪০ শতক জায়গায় তা্ঁদের রাজ পরিবারের পূর্ববর্তী রাণী দয়াময়ী’র নামে বিদ্যালয় স্থাপনের সম্মতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে উক্ত জায়গা থেকে ৩১ শতক জমি রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে তিনি দান করেন।  বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এর জেলা প্রশাসক এর স্মারক নং- ২৫৫/তারিখ - ০৮/০৭/১৯৭৭ মূলে বিদ্যালয়টির নাম ও স্থান পরিবর্তনের আবেদনের পেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা এর মাননীয় সচিব  মহোদয়ের চিঠির নং- রিকগ-১৮/পা- চট্ট/৭২/২৭৯৪, তারিখ- ১৫/০৭/১৯৭৭ মূলে বিদ্যালয়ের নাম কাঠালতলী উচ্চ বিদ্যালয়, বনরূপার স্থলে রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়- এর নতুন ভবনে ক্লাস শুরুর অনুমতি প্রদান করেন। ১৯৮০ সনে প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমিক স্তরে এমপিও হয়। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিতযশা শিক্ষাবিদ প্রয়াতঃ শান্তিময় চাকমা ০৩/০১/২০০৩ খ্রিঃ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তা্ঁর মৃত্যুর পর জনাব সনৎ কুমার বড়ুয়া তৎস্থলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২৮/০২/২০০৭ খ্রিঃ তারিখে জনাব সনৎ কুমার বড়ুয়া অবসর গ্রহণ করলে মার্চ-২০০৭(০১-০৩-২০০৭) থেকে অদ্যাবধি প্রধান শিক্ষক হিসাবে জনাব রণতোষ মল্লিক, এম, এ, বি.এড,এম.এড. দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তা্ঁর দায়িত্ব গ্রহণের পর ঐ ১০২নং রাঙাপানি মৌজার ৭২নং খতিয়ানের ৪৯২ নং দাগের বিপরীতে আরও ৫ শতক জমি ব্যবরিষ্টার দেবাশীষ মহোদয়ের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিনে নেওয়া হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় সরকারি কোষাগারে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে বিদ্যালয় এলাকায় আরও ৭২.৭৩ শতক জায়গা বিদ্যালয়ের নামে নামজারি করে নেওয়া হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের রেকডীয় জায়গার মোট পরিমান ১ একর ৮.৭৩ শতক এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা সহস্রাধিক। প্রাথমিক পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিন শেড ভবন নির্মান করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষা প্রেকৗশল অধিদপ্তর কর্তৃক ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি দ্বিতল ভবন নির্মান করা হয়। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃ ক প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ কক্ষ বিশিষ্ট ৫ তলা একাডেমিক ভবন নির্মানের কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি সদাশয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল বিশিষ্ট একটি ভোকেশানাল ভবণ নির্মানের কাজ শেষ হওয়ার পথে। সাথে সাথে ২০২০ শিক্ষা সেশনে অত্র বিদ্যালয়ে দুটি ট্রেডে ( ফুড প্রসেসিং এন্ড প্রিজারভেশণ এবং জেনারেল ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়াক্স) ৮০ জন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করিয়ে সাধারণ শিক্ষার পাশা পাশি কারিগরি শিক্ষার দ্বার উম্মোচন করা হয়। আশা করছি আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট শিক্ষার্থী, শিক্ষক,অভিভাবক ও অবকাঠামো নিয়ে স্মার্ট রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে পার্বত্যাঞ্চলে পরিচিতি লাভ করবে।